শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৩ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেক্স: ঝালকাঠি জেলার সুগন্ধা নদীতে তেলবাহী ট্যাংকার সাগর নন্দিনী-২ বিস্ফোরণের ঘটনায় নিখোঁজ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (০৩ জুলাই) সকাল ১১টার থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে বিস্ফোরণে উড়ে গিয়ে নদীতে পড়ে যাওয়া জাহাজের ভাঙা (মাষ্টার ব্রিজ) অংশে তল্লাশি চালিয়ে ওই তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ঝালকাঠির স্টেশন কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, এর ফলে দুদিনে নিখোঁজ চারজনেরই মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখন আর কারও নিখোঁজের খবর আমাদের কাছে নেই।
বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা জানান, বিস্ফোরণের পর সাগর নন্দিনী-২ জাহাজটির একটি অংশ উড়ে গিয়ে সুগন্ধা নদীতে পড়েছিল। সোমবার সকাল থেকে জাহাজটির বিচ্ছিন্ন অংশ উদ্ধারে কাজ শুরু করে বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী জাহাজ ’নির্ভীক’। পরে বেলা ১১টার দিকে ভাঙা অংশটি উদ্ধারের পরপরই দুই জনের মরদেহ পাওয়া যায়। আর বিকেলে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সকালে উদ্ধার হওয়া মরদেহ দুটি তেলের ট্যাংকারটির মাস্টার রুহুল আমিন খান ও ইঞ্জিন ড্রাইভার মাসুদুর রহমান বেলালের। আর বিকেলে উদ্ধার হওয়া মরদেহটি ইঞ্জিন ড্রাইভার সরোয়ার হোসেন আকরামের বলে নিশ্চিত করেছেন স্বজনরা।
এরআগে দুর্ঘটনার পরের দিন ২ জুলাই বিকেলে আগুনে পোড়া জাহাজের ইঞ্জিন রুম থেকে ট্যাংকারের গ্রিজার হৃদয় হোসেনের পোড়া মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট শাফায়েত।
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন সরকার জানান, উদ্ধার হওয়া সব মরদেহের পরিচয় মিলেছে। ময়নাতদন্ত শেষে সবার মরদেহ তাদের নিজ নিজ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) সাগর নন্দিনী-২ ট্যাংকারটি ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর পাড়ে পদ্মা অয়েল কোম্পানির জন্য জ্বালানি তেল নিয়ে আসে। ১১ লাখ লিটার জ্বালানি তেল নিয়ে সেটি নোঙ্গর করা ছিল ঝালকাঠির পৌর খেয়াঘাটের বিপরীতে রাজাপুর গ্রামের কাছে।
শনিবার (০১ জুলাই) দুপুর ২টা ১০ মিনিটের দিকে হঠাৎ করেই ট্যাংকারটিতে বিস্ফোরণের পর আগুন ধরে যায়। এতে জাহাজের পাঁচজন দগ্ধ হলে তাদের উদ্ধার করে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহতদের মধ্যে বাবুর্চির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জাহাজটিতে মোট নয়জন ছিলেন। সেই হিসেবে নিখোঁজ থাকেন চার স্টাফ।
এদিকে, এখন পর্যন্ত বিস্ফোরিত জাহাজটি থেকে চারলাখ লিটার তেল সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পদ্মা অয়েল কোম্পানির কর্মকর্তারা। এছাড়া বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে কোম্পানির ব্যবস্থাপককে (অপারেশন) প্রধান করে চার সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড। শনিবার দুর্ঘটনার পর থেকেই কমিটির সদস্যরা কাজ শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান।